লালবাগ রাজস্ব সার্কেল
মনিরুজ্জামান : দেশব্যাপী এসিল্যান্ড অফিসগুলো দালালচক্রে অভয়ারন্যে পরিণত হয়েছে। জন প্রতিনিধি থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ বিভিন্ন কর্মকর্তা ব্যক্তিবর্গ বিচারপ্রার্থী জনগন মূলত জমির মালিকরা এই দুর্নীতিবাজ অফিসারদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে । তারা সেবা প্রদানের নামে মানুষকে সীমাহীন ভোগান্তি দিয়ে থাকে। সেবা প্রার্থী কে জিম্মি করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে বলেও লিপিবদ্ধাকারে অভিযোগ রয়েছে। এতে ভূমি মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের দপ্তরসমূহের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে চলেছে। দুর্নীতিমুক্ত উন্নত মান ও গুন সম্পন্ন ভূমি শতবাগ সেবা যথাযথভাবে নিশ্চিত করণ ও দুর্নীতি রোধে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী দায়ীত্বভার গ্রহণের পর দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করে বলেন, আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়, দুর্নীতিবাজদের কঠোর হাতে দমন করা হবে। অনুসন্ধানে জানা যায়,ঢাকা মহানগরীর রাজস্ব সার্কেল গুলোর বাস্তব চিত্র পুরোটাই ভিন্ন। মহানগরীর ওই সব এসি ল্যান্ড অফিস সমূহে সহনীয় পর্যায়ে অনিয়ম-দুর্নীতি সেবা প্রদানের নামে হয়রানির অভিযোগ থাকলেও দুর্নীতির শীর্ষে রয়েছে লালবাগ ও মিরপুর রাজস্ব সার্কেল। অনেকে বিদ্রুপ করে থাকেন,এই দুই সার্কেলের এসি ল্যান্ডরা দুর্নীতিতে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে তাদের নানা বিধ কুকীর্তির কথা । লালবাগ রাজস্ব সার্কেলের এসি ল্যান্ড ফারজানা রহমান, ভারপ্রাপ্ত কানুনগো – সার্ভেয়ার হারুন, নাজির কাম ক্যাশিয়ার ও চক্রের প্রধান হোতা ঘুষখোর হেলাল, ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আহাম্মদ উল্লাহ , ওমেদার জসিম, রিয়াজ, মুরাদ, রাসেদ, মনির, আলমগীর, পারভেজ, বাবলু ও রুহুল এরা সকলেই বহিরাগত দালাল। মনির ও রুহুল শিক্ষিত ওমেদার দাবি করায় চেয়ার টেবিল দিয়ে ভূমি অফিসে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এসিল্যান্ড ফারজানার বিরুদ্ধে। তবে ওই দুইজন ওমেদার ভুয়া দলিল সৃজনে বেশ পারদর্শী বলে জনশ্রুতি রয়েছে। ওই চক্রের সদস্য ভলিয়ম বহি কারসাজি করার অপরাধে ঢাকা তেজগাঁও রেজি কমপ্লেক্স হতে গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। মামলাটি সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে। আর ৩৪ ব্যাচের এই অফিসার ফারজানা ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিএজি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ধ্যাকালীন কোসে এমবিএ করে কর্মজীবন শুরু করে সোনালী ব্যাংকে, তবে সেখানে সুবিধা করতে পেরে ৩৪তম বিসিএস এর মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করে। লালবাগ রাজস্ব সার্কেলে যোগদানের পর পুরো অফিসটি দুর্নীতির অভয়ারণ্যে পরিণত করেছেন। লালবাগ রাজস্ব সার্কেলে টাকা ছাড়াকোন সেবা মিলে না । অভিযোগ রয়েছে,এসিল্যান্ড ফারজানার স্বামী ঢাকা ওয়াসার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সাইফুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০২ -৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাত্র । বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানের শিষ্য। ছাত্রদলের ওই ক্যাডার ও তার বাহিনীর হাতে তৎকালীন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণকারী একাধীক ছাত্র সহ ছাত্রলীগ কর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলেও জানা গেছে। একজন চিহ্নিত সাবেক ছাত্র দলের ক্যাডার ঢাকা ওয়াসার মত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে কিভাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়ীত্বে রয়েছেন,সচেতন মহলের প্রশ্ন? চক্রটির বিরুদ্ধে ইতো পূর্বে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, গত১০/ ১২ /২০২০ইং তারিখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ভূমি মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের চেয়ারম্যান বরাবর জনস্বার্থে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।