বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৯ অপরাহ্ন

আন্দোলনরত আনসারদের সঙ্গে বহিরাগতরা,ব্যবস্থা নিতে কমিটি গঠন:ডিজি

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা / ৮ Time View
Update : বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৪, ৭:৫৩ অপরাহ্ন

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের মতো আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর একটি অংশও চাকরি জাতীয়করণসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলো। দাবি আদায়ে সচিবালয় ঘেরাও করে রাখার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে। তাতে আহতও হয়েছেন অনেকে।

বাহিনীটির উর্ধ্বতনরা বলছেন,আন্দোলনরত আনসার সদস্যদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার পরেও রহস্যজনক কারণে তারা সচিবালয় ও বাহিনীর সদর দফতরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিশৃঙ্খা করার চেষ্টা করছিলো। আন্দোলনরতদের মধ্যে অনেক বহিরগত প্রবেশের তথ্য প্রমাণ পেয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বাহিনীটি। ইতোমধ্যে চিহ্নিত আনসার সদস্যদের চাকরি স্থগিত করা হয়েছে।

প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে অবৈধভাবে ঘেরাও প্রবেশ এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ,পল্টন ও রমনা থানায় তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় ৩৭৫ জন আনসার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন।

বুধবার রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানিয়েছেন বাহিনীটির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন না করলেও গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

বাহিনীটির মহাপরিচালক বলেন,আন্দোলনরত আনসার সদস্যদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু গ্রুপ ছিলো। যেখানে প্রত্যেক আনসার সদস্যকে বাহিনীর পোশাক পরিহিত হয়ে আসার পাশাপাশি অতিরিক্ত একটি পোশাক নিয়ে আসতে বলা হয়। এর মাধ্যমেই বোঝা যায়,আনসারের পোশাকে আন্দোলনে বহিরাগতরা ছিলো। এই তথ্য আমাদের কাছে এসেছে। এমন কি আমি নিজেও বিভিন্ন গ্রুপে এমন নির্দেশনা দেখেছি।

তিনি আরও বলেন,সচিবালায়ে আনসার সদস্যরা অবস্থান নেওয়ার পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টরা আলোচনা করা হয়। এমন কি সেই আলোচনায় আন্দোলনরত আনসারদের সমন্বয়করা ছিলো। আলোচনা শেষে তাদের দাবি মানার বিষয়ে ঐক্যমতো পৌঁছাই। একটি কমিটিও গঠন করা হয়। তারা বাইরে এসে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেয়। কিন্তু সেখানে বহিরাগতরা থাকায় আন্দোলন থেকে সরে আসছিলো না। এর মাধ্যমেই বোঝা যাচ্ছে, আসলে তাদের উদ্দেশ্য অন্য কিছু। এমন কি সমন্বয়করা বিষয়টি স্বীকারও করেছে যে তাদের ঘোষণাও মানা হচ্ছিলো না। এমন কি এই সকল আন্দোলনে নানা অপকর্মের কারণে চাকরি হারানো আনসার সদস্যরাও ছিলো না। আন্দোলনটা শুরুতে আনসারদের থাকলেও পরবর্তীতে এটা অন্যকারো হাতে চলে গেছিলো।

তবে আনসারদের দাবি যৌক্তিক ছিলো। তাই আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য কমিটিও গঠন করে দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা সকল কিছুর বাইরে যেতে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিলো। এই ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। অনেককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তার দায়িত্ব ফেলে আন্দোলনে যাওয়া আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন,আনসার সদস্যরা দেশের বিমানবন্দরসহ কেপিআই ভুক্ত স্থাপনার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন। অথচ তারা সেই সকল স্থাপনার অরক্ষিত অবস্থায় ফেলে আন্দোলনে এসেছেন। এছাড়া শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হিসেবে অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ করার সুযোগ নেই। ফলে শৃঙ্খল বাহিনীর সদস্য হিসেবে তারা যে কাজটি করেছে তাদের সবাইকে আনসার বাহিনীর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন,ইতোমধ্যে আমরা আমাদের সকল অস্ত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছি। কারণ অবাধ্য কারো হাতে অস্ত্র থাকলে সেটি দেশ ও জাতির জন্য ঝুঁকির কারণ। কর্মস্থল ত্যাগকরা আনসারদের চাকরি স্থগিত করা হয়েছে। কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা কর্মস্থলে ফেরেন নি তাদের পলাতক হিসেবে ধরা হয়েছে। যারা সাধারণ আনসারদের ইন্ধন দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গোপালগঞ্জ জেলায় ২৯ হাজার আনসার সদস্য নিয়োগের তথ্য সঠিক নয়। প্রতিটি জেলার আলাদা আলাদা সংখ্যা নির্ধারিত থাকে। তাই বেশি নিয়োগের সুযোগ নেই। তাই প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়। গোপালগঞ্জ জেলা থেকে নিয়োগ পাওয়া আনসারদের সংখ্যা ১৩০০।

ডিআই/এসকে


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category