আলাদিনের জাদুর চরাগ পেয়েছেন রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ জুয়েল রানা। তিনি বর্তমানে রাজস্ব কর্মকর্তা (কাস্টমস্), সিলেট এয়ারপোর্টে কর্মরত। তর অঢেল সম্পদের বিবরণ শুনলে যে কারো চোখ কপালে ্উঠব। জনস্বার্থে তার ্এ বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক বিধি মাতাবেক প্র্রয়োনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ অতীব জরুরি বলে মনে করেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা।
দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের চেয়ারম্যান বরাবর করা লিখি এক অভিযোগে প্রকাশ, মোঃ জুয়েল রানা, রাজস্ব কর্মকর্তা (কাস্টমস্), সিলেট এয়ারপোর্টে রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। তার পিতার নাম- মোঃ খলিলুর রহমান, মাতা- মোসাঃ খাইরুন নিহার, তার জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ২৬৯৬৩৫২২৩৬৭৭৯, জন্ম তারিখ- ২৫/১২/১৯৮৩ইং, তার টিআইএন নং- ৮৬৬৫০৩৫৮৪৮৪৬, কর সার্কেল- ৭৫, কর অঞ্চল- ৪, ঢাকা। স্থায়ী ঠিকানাঃ গ্রাম- নিতুপাড়া, ডাকঘর- ভোড়িয়া, উপজেলা- অটোয়ারী, জেলা- পঞ্চগড়, বর্তমান ঠিকানাঃ এম ও টাওয়ার, ৮-৯, পশ্চিম আগারগাঁও, শের-ই-বাংলা নগর, ঢাকা- ১২০৭। তার স্ত্রীর নাম- জলি বেগম, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে মজুরী কমিশন আগারগাঁও সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরীরত। তার স্ত্রীর টিআইএন নং- ১৩৪০২০৭৩৯২৬১, কর সার্কেল- ২২৬, কর অঞ্চল- ১১, ঢাকা। তার স্ত্রীর পিতার নাম- মোঃ ফয়জুল হক, মাতা- আমিনা বেগম, স্থায়ী ঠিকানাঃ গ্রাম+ডাকঘর- বটালুপাড়া, উপজেলা- আটোয়ারী, জেলা- পঞ্চগড়। বর্তমান ঠিকানাঃ এম ও টাওয়ার, ৮-৯, পশ্চিম আগারগাঁও, শের-ই-বাংলা নগর, ঢাকা- ১২০৭।
অভিযোগে আরো প্র্রকাশ, মোঃ জুয়েল রানা সিলেট বিমানবন্দরে যত্রীদের হয়রানি করে মনকি তাদের মালামাল আটক রেখে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তা ফেরত দিয়ে থাকেন। তিনি নিয়মিত যাত্রীদের লাগেজসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়বহির্ভূতভাবে হয়রানি করি আটক রাখেন। যাত্রীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ ঘুষ আদায় করে ব্যবসায়ীদের মালামাল সরবরাহ করেন। এই বিষয়ে মোঃ জুয়েল রানার বিরুদ্ধে শত শত অভিযোগ অনেক দপ্তরে জমা পড়েছে।
কেবল তিনি নন, তার স্ত্রী জলি বেগম ক্ষমতার অপব্যবহার করে বে- সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ঘুষের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকান্ড করিয়ে দেন। মোঃ জুয়েল রানা বর্তমানে অবৈধভাবে তিনি নিজে ও পরিবারের অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের নামে নিজ এলাকা ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলেছেন। জুয়েল রানা অল্প দিনের মধ্যেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। এলাকারবাসী মনে করে, তাকে নিয়ন্ত্রণ করার মতো কোন দপ্তর সক্ষম নয়।
আরো না যায়, তার বাবা একজন কলেজের এএলএসএস ছিলেন। এখন জুয়েল রানা কোটি কোটি মালিক বনে গেছেন নিজে এবং তার পরিবারের সদস্যরা।
জুয়েল রানা, তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের অবৈধ সম্পদের কিঞ্চিত ফিলিস্তি তুলে ধরা হলো: (১) এম ও টাওয়ার, ৮-৯, পশ্চিম আগারগাঁও, শের-ই-বাংলা নগর, ঢাকা- ১২০৭। উক্ত বাড়ীটির ৭ম তলার সামনের দিকের তিনি ১৫০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন এবং উক্ত ফ্ল্যাটে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা বসবাস করতেছেন। উক্ত ফ্ল্যাটটির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। কিন্তু তিনি তার আয়কর নথিতে ফ্ল্যাটটির ক্রয়মূল্য দেখিয়েছেন মাত্র ৩০ লক্ষ টাকা।
(২) বাসা নং-৫৫, রোড-০৫ মোহাম্মদপুর, মোহাম্মদিয়া হাউজিং, ব্লক-বি, ঢাকা ১২০৭। উক্ত বাসার ৫ম তলায় তিনি একটি ২৫০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন তার মায়ের নামে। কিন্তু তার মা একজন গৃহিনী হওয়া স্বত্বেও এত বিলাশবহুল ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন।
(৩) বাসা নং- ১৫০, রোড-০১, ফ্লাট নং-২/বি, টোলারবাগ আবাসিক এলাকা, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬। উক্ত বাসার তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট তিনি তার পিতার নামে ক্রয় করেছেন ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে। তার বাবা একজন পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারি উপজেলার কলেজের একজন এমএলএসএস হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু একজন এমএলএসএস এর নামে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন।
(৪) বাসা- ৯৮৭, রোড-০৬, সেক্টর-১৮, উত্তরা, ঢাকা- ১২৩০। উক্ত বাসাটি তিনি ১০ কাঠা জমির উপর একটি বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। যাতে ব্যয় হবে প্রায় শতকোটি টাকার মতো।
(৫) বাসা-১৩, রোড নং-০৯, ব্লক- সি, সেকশন- ১১, মিরপুর, পল্লবী, ঢাকা। উক্ত প্লটটি তিনি ৫ কোটি টাকা দিয়ে ক্রয় করে বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা শুরু করেছেন।
(৬) রূপসি বাংলা বিল্ডিং নং- ১০, বাসা নং-০৫, রোড-০২, সেকশন- ১৫, থানা- কাফরুল, ঢাকা- ১২০৬। উক্ত প্লটের ৫ম তলায় একটি ২৫০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে।
(৭) বাড়ী নং-৭৮, রোড-০৭, কাজী বাড়ী দক্ষিণখান, থানা- দক্ষিণখান, ঢাকা। উক্ত বাড়ীটি তিনি ১০ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন। যেখানে তিনি বাড়ীটি অন্যের নিকট ভাড়া দিয়েছেন।
(৮) প্লট নং-৬৭, রোড-১/ডি, ব্লক-বি, ফ্ল্যাট নং- ৬/ডি, গুলশান এভিনিউ, খানা- গুলশান, ঢাকা। উক্ত বাড়ীর ৫ম তলায় ৩৩০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন ৬ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা দিয়ে।
(৯) ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন কাউন্দিয়া মৌজায় তার ও তার স্ত্রীর নামে একটি ৫০ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন। উক্ত জমির উপর নিটশেড বাড়ী রয়েছে। উক্ত সম্পত্তির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৮০ কোটি টাকা।
(১০) পঞ্চগড় জেলার পঞ্চগড় মৌজায় তার নিজের নামে আধা-পাকাঘর সহ ৩০ শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন। যার বর্তমান বাজার ৫০ লক্ষ টাকা।
(১১) পঞ্চগড় জেলার ধাক্কামারা মৌজায় আধাপাকা ঘরসহ ৬০ শতাংশ জমি তার নিজের নামে ক্রয় করেছেন। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা। তার আয়কর নথি সূত্রে জানা যায়।
(১২) পঞ্চগড় জেলা সহরে মাস্টারপাড়া এলাকায় তার একটি ৭ম তলা বিলাশ বহুল বাড়ী রয়েছে যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৮ কোটি টাকার উপরে। পঞ্চগড় জেলা শহরে তার ও তার স্ত্রীর নামে ১৫ একর জমি ক্রয় করেছেন প্রায় কোটি টাকা খরচ করে। উল্লেখ্য যে, তার নিজ থানায় তার স্ত্রীর নামে, তার নিজ নামে ও পরিবারের প্রত্যেক সদস্যদের নামে ৭০ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন। এবং কয়েকটি ব্যাংকে তার স্ত্রী এবং তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে বে নামে কোটি কোটি টাকা গচ্ছিত রেখেছেন। একজন কাস্টমস্ এর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হয়ে কিভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হলেন। তা স্থানীয় জনসাধারণ হতাশ। তার বিষয়ে সঠিক তদন্ত করলে আরো গুরুত্বপূর্ণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া যাবে। তিনি বর্তমানে একটি বিলাসবহুল প্রাইভেট কার ক্রয় করেছেন ৫৬ লক্ষ টাকা দিয়ে। যা তার স্ত্রী জলি বেগম নিয়মিত ব্যবহার করেন।
উল্লেখ্য, তিনি ও তার পরিবারের ৩টি উন্নতুমানের গাড়ি ব্যবহার করেন। যার গাড়ী নং ঢাকা মেট্রো-গ-৪৩-০২৯১, ঢাকা মেট্রো-গ-৪৬-৯২১১, ঢাকা মেট্রো-চ-৩২-৫৫৯৯। এর বাইরে দেশে ও বিদেশে নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে।
দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এবং প্রশাসনকে দুর্নীতি মুক্ত রাখতে জুয়েল রানাদের মতো আঙ্গুল ফুলে কলাগাছদের বিরুদ্ধে নির্মোহ তদন্তপূর্বক বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় আ্ইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ সময়ের দাবি।