ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চলমান ডিএনসিসি’র সপ্তাহব্যাপী বিশেষ মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো.মাহমুদুল হাসান।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর ) সকালে মিরপুর, সেকশন-৬ এর অন্তর্গত বি ব্লক এলাকায় তিনি এই পরিদর্শন করেন।
এসময় উপস্থিত মশক কর্মী ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটানোর পাশাপাশি এডিসের লার্ভা জন্মাতে পারে এমন উৎসগুলো পরিচ্ছন্ন করার মাধ্যমে ধ্বংস করতে হবে৷ স্বাস্থ বিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও প্রকৌশল বিভাগে সম্মিলিতভাবে কাজ করলে ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত তদারকি টিম প্রতিটি অঞ্চলে পরিচালিত কার্যক্রম সঠিকভাবে তদারকি করছে। শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য নাগরিকদের সম্পৃক্ত করতে হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করনীয় সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে হবে।’
নগরবাসীর উদ্দেশ্যে প্রশাসক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা বাসাবাড়ির আশপাশ পরিষ্কার করে এবং ওষুধ ছিটায়। কিন্তু বাসাবাড়ির ভিতরে আমাদের কর্মীদের পক্ষে কাজ করা সম্ভব হয় না। তাই নিজেদের বাসাবাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ফ্রিজ, এসি, ফুলের টব, অব্যবহৃত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের খোলা প্যাকেট, বিভিন্ন ধরনের খোলা পাত্র, ছাদ কিংবা অন্য কোথাও যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।’
সপ্তাহব্যাপী বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচির তৃতীয় দিনে ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলেই একযোগে জনসচেতনতা ও মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলমসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। শিক্ষার্থীরাও ডিএনসিসি’র এই সপ্তাহব্যাপী জনসচেতনতা কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে।
উল্লেখ্য, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) থেকে একযোগে ডিএনসিসি’র সব ওয়ার্ডে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচি শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। এই বিশেষ কর্মসূচি ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিচালনা করা হবে।
এ কার্যক্রম একযোগে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৫৪ টি ওয়ার্ডে পরিচালনা করা হচ্ছে। বিশেষ মশক নিধন কার্যক্রমে স্বাস্থা বিভাগের সাথে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং প্রকৌশল বিভাগ সমন্বিতভাবে কাজ করছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হতে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর ঠিকানা সংগ্রহ করে এ সকল ঠিকানার চারপাশে ফগিং এবং লার্ভিসাইডিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়াও বছরব্যাপী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হতে প্রাপ্ত ডেঙ্গু রোগীর ঠিকানায় সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণ টেলিফোনে সরাসরি যোগাযোগ করে সচেতনতামূলক পরামর্শ প্রদান এবং কীটনাশক প্রয়োগ প্রদান নিশ্চিত করছে। কীটনাশক প্রয়োগের পাশাপাশি বছরব্যাপী এডিস মশার নিয়ন্ত্রণে করনীয় সম্পর্কিত বার্তা সম্বলিত লিফলেট ও ষ্টিকার বিতরণ, মাইকিং, র্যালী এবং এ্যাডভোকেসী সভার আয়োজন করা হয়েছে।
সপ্তাহব্যাপী পরিচালিত বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচিতে প্রতিটি ওয়ার্ডকে বিভিন্ন সাব ব্লকে ভাগ করে প্রতিটি ব্লকের সকল বাড়ি পরিদর্শনের মাধ্যমে এডিস মশার প্রজনন স্থল চিহ্নিত করে কীটনাশক প্রয়োগ এবং ধ্বংস করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে পরিচালিত সপ্তাহব্যাপী বিশেষ মশক নিধন কার্যক্রম পরিদর্শনের জন্য ডিএনসিসির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রতিটি অঞ্চলের জন্য একটি করে কেন্দ্রীয় মনিটরিং টীম গঠন করা হয়েছে। প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিশেষ মশক নিধন কার্যক্রম তদারকির জন্য গঠিত কেন্দ্রীয় মনিটরিং টীমসমূহের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ডিআই/এসকে