ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চলমান নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রেরিত ডেঙ্গু রোগীর তালিকা অনুযায়ী তাদের তথ্য ও ঠিকানা সংগ্রহ করে আবাসস্থল ও চারপাশে বিশেষ লার্ভিসাইডিং ও এডাল্টিসাইডিং কার্যক্রমের মাধ্যমে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা হচ্ছে।
নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রমের পাশাপাশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণ এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় সভা আয়োজন করছে নিয়মিত।
প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, ‘মশক নিধন কার্যক্রম যথাযথভাবে বাস্তবায়ন, সমন্বয় ও নিবিড় তদারকির জন্য এবছর শুরু থেকেই আমাদের কর্মকর্তারা সরেজমিনে মাঠে কাজ করে যাচ্ছে।
ডিএনসিসির কর্মকর্তা এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকতাদের সমন্বয়ে গঠিত টিম নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রম তদারকি করেছে। সারা বছর আমাদের কর্মীরা জনগণকে সচেতন করেছে। ডেঙ্গু রোগের সংক্রমণ হতে নাগরিকদের রক্ষাকল্পে জনসচেতনতা সৃষ্টি, মশার প্রজননস্থল বিনষ্টকরণ, পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা এবং লার্ভা ও মশা নিধন ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, র্যালি এবং বাড়ি-বাড়ি এডিস মশার প্রজননস্থল অনুসন্ধান করে ধ্বংস করার ফলে গত বছরের তুলনায় এই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক কম। আমরা এটি আরও নিয়ন্ত্রণে আনতে কার্যক্রম জোরদার করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগীর তালিকা অনুযায়ী তাদের সাথে যোগাযোগ করছি এবং কন্টাক্ট ট্রেসিং এর ব্যবস্থা করছি। প্রায় ক্ষেত্রেই আমারা দেখতে পাচ্ছি রোগীর ঠিকানা ডিএনসিসি দেখানো হলেও তিনি আসলে এই উওরের বাসিন্দা নয়। রোগীর তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা যায় তালিকার তুলনায় আমাদের ডিএনসিসির এলাকার প্রকৃত রোগীর সংখ্যা অনেক কম।’একটা সঠিক এবং সময়োপযোগী কর্ম পরিকল্পনার জন্য সঠিক বিশ্বাসযোগ্য তথ্য- উপাত্ত অত্যন্ত জরুরী।
প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরও জানান, ‘উত্তর সিটি কর্পোরেশন শুধুমাত্র হাসপাতালের ডেংগু রোগীদের নিয়ে কাজ করছে না বরং কমিউনিটিতে যে রোগী গুলো আছে তাদেরকে খুঁজে বের করার জন্য সিটি কর্পোরেশনের ভলেন্টিয়ার গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। এছাড়া উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৬ টি নগর মাতৃসদন ও মাতৃকেন্দ্রে বিনামূল্যে নাগরিকদের জন্য ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে সনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা বেশি হলেও সঠিক সময়ে রোগ নিরূপণ ও সঠিক চিকিৎসা প্রাপ্তি উত্তর সিটি কর্পোরেশনের রোগীদের জটিলতা ও মৃত্যুহার বহুলাংশে কমাতে সাহায্য করছে বলে আমরা মনে করি’
উল্লেখ্য, গত ০৬ নভেম্বর স্থাস্থ্য অধিদপ্তরের ড্যাসবোর্ড রিপোর্ট অনুযায়ী ডিএনসিসির ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ২৯২ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তালিকায় সংযুক্ত ঠিকানা অনুযায়ী ডিএনসিসির রোগীর সংখ্যা ১৩৭ জন। রোগীদের সাথে যোগাযোগ করে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ডিএনসিসি এলাকায় বসবাসকারী ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৮৯জন (বাকি ৪৮ জন ডিএনসিসি’র এলাকা বহির্ভূত রোগী)। তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা যায় অনেক রোগী ডিএনসিসি এলাকার হাসপাতালের এবং আত্মীয় স্বজনের বাসার ঠিকানা ব্যবহার করায় ডিএনসিসি এলাকায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রকৃত সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি।
ডিআই/এসকে