রাষ্ট্রের নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমে ভূমি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের বিল ছাড় নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের পাহাড় জমেছে ঢাকা অধিগ্রহণ শাখা-১ এ। অধিগ্রহণ শাখা-১ এ ক্ষতিগ্রস্তদের বিল প্রদানের নামে চলছে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা। ঢাকা ডি,সি অফিসের চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ সার্ভেয়ার সজল ও আতিক গড়ে তুলেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এই চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে ভুমি বিল গ্রহণ করতে আসা সাধারন সেবা প্রত্যাশিরা। অধিগ্রহণের নামে চলছে ব্যাপক লুটপাট, অনিয়ম রমরমা ঘুষ বাণিজ্য। আইনের তোয়াক্কা না করে সেখানে ফ্রি স্টাইলে চলছে দুর্নীতি। সার্ভেয়ার আতিক ও সজল গংদের দৌরাত্ম্য এত বৃদ্ধি পেয়েছে যে, ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকরা এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছে দুর্নীতিবাজ এই সার্ভেয়ার সিন্ডিকেটের কাছে। সার্ভেয়ার আতিক ও সজল সাবেক ডিসি মহিবুল (পরবর্তিতে পদোন্নতি প্রাপ্ত সচিব) এর সাথে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলে ভূমির শ্রেনী পরিবর্তন করে সরকারের শতশত কোটি টাকা রাজস্ব তছরুপ এর মাধ্যমে ভাগবাটোয়ারা করে নিজেদের আখের গোছায়। এই সিন্ডিকেটের মাষ্টার মাইন্ড ছিলো সার্ভেয়ার আতিক ও সজল গং। পরর্তীতে দৈনিক সোনালী খবরের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসনের নজরে আসে এই সিন্ডিকেট। তারপ্রেক্ষিতে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। দুর্নীতির সত্যতা প্রমানে পরবর্তীতে সার্ভেয়ার আসাদ, আনিস, মজিুবুল, কবিরসহ বেশ কয়েকজন সার্ভেয়ারকে সরকারি চাকুরী বিধি মোতাবেক দুর্নীতির দায়ে চাকুরী হতে বরখাস্ত করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। তৎকালীন আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের দুই প্রভাবশালী মন্ত্রীর সাথে গভীর সম্পর্ক থাকার কারনে অদৃশ্য ক্ষমতা ও পেশিশক্তির কারনে সার্ভেয়ার আতিক ও সজল গংদের নাম তদন্ত রিপোর্টে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এই দ্রুতবাজ দুই সার্ভেয়ার চটকরে এল, এ শাখা হতে ক্ষমতার জোরে এসিল্যান্ড অফিসে পোস্টিং নেয়। দীর্ঘদিন অপকর্ম করে পুনরায় আগের কর্মস্থল এল,এ শাখায় ফেরত আসেন। এই শাখায় সার্ভেয়ার হিসেবে যোগদান করেই ঘুষ-বাণিজ্যের একটি ভয়ঙ্কর চক্র গড়ে তুলে। প্রতিটি অধিগ্রহণের বিল ছাড়ের নামে ভূমি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের নিকট থেকে ৫%- ১২% পর্যন্ত ঘুষ নেয় চক্রটি। কোন গ্রাহক যদি ঘুসের টাকার পার্সেন্টেজ কম দিতে চায় তাহলে সার্ভেয়ার আতিক, সজল গং গ্রাহকদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলে যে আপনাদের এই ভুমি নিয়ে মামলামোকদ্দমা চলমান আগে তা নিষ্পত্তি করে আসেন তারপর বিলের হিসেব কইরেন। প্রকাশ্য যে ইতোপূর্বে এই চক্রটি একজনের বিল অন্য জনের নামে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধমে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহনের সময় হাতেনাতে ধরা পড়ার একাধিক নজির রয়েছে। তৎকালীন ভুমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা বোমা কাদের ও নাজির আবু বক্কর সিদ্দিক স্বৈরাচার সরকারের আর্শিবাদপুষ্ট হওয়ায় তারে বিরুদ্ধে একটি মামলা হলেও দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্তে ধামাচাপা পড়ে যায়। নাজির আবু বক্কর সিদ্দিক অদ্যাবধি চাকুরী হতে সাময়িক বরখাস্থ রয়েছে বলে জানা যায়। প্রকল্প এডি খাল, এল এ কেস নং-০১.০১.০৫/২০২১-২০২২ এর বিল প্রদানের কার্যক্রম চালু রয়েছে, যেখান থেকেও গ্রাহককে হয়রানীর মাধ্যমে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়ার জন্য দুর্নীতিবাজ আতিক সজল গংরা উদগ্রীব হয়ে আছে।
দুর্নীতিবাজদের ভাষ্যমতে ১২% ঘুষের মধ্যে ভূমি মন্ত্রনালয় ও এ,ডি,সি এল. এ.কে প্রায় ৬-৭% ঘুষের টাকা প্রদান করতে হয় আমাদের চেয়ার ঠিক রাখার জন্য। এবিষয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসক ও ভুমি সচিবকে একাধিবার ফোন দিয়েও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের আজ প্রকাশ হলো প্রথম পর্ব।