ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও যারা জড়িত আছে তাদেরকে গ্রেফতারে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
সোমবার বেলা ১১ টায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
গত বুধবার মুসলিম হলের অতিথি কক্ষে ৩২ বছর বয়সী মানষিক ভারসাম্যহীন তোফাজ্জল হোসেন নির্যাতনের শিকার হন। কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ৬ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে পুলিশ,যারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আর এ ঘটনায় আট ছাত্রের সংশ্লিষ্টতা পেয়ে বহিস্কার করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তালেবুর রহমান বলেন,”ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে শুরু থেকেই পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত ছিল। মামলার পর আমাদের ঊর্ধ্বতনরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।”
“এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন আমাদের কাছে ৬ জন ছাত্রকে সোপর্দ করেছে। তাদেরকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিছু ফাইন্ডিংস আমাদের জানিয়েছে। আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ রেখে বাকি যারা জড়িত তাদেরকে গ্রেফতারে তৎপরতা অব্যাহত আছে।”
“আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে, তদন্তে যদি আরও কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি।”
যেসব পুলিশ সদস্যরা কর্মস্থলে অনুপস্থিত তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,”যারা এখনও অনুপস্থিত, আপনারা জানেন আমাদের কিছু আইন ও বিধির মধ্যে চলতে হয়। চাকরিতে কিছু নিয়ম-কানুন আছে। সেই নিয়ম কাকুন বিধি অনুযায়ী যদি কেউ বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকেন তাহলে চাকরি বিধি মেনে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির এই মুখপাত্র বলেন, “ঢাকার ২২ টি থানা আংশিক বা পরিপূর্ণ ধ্বংস হয়েছে, সবমিলিয়ে ২১৬ টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি অল্প সময়ে সংস্কার করে আগের পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার। আমরা সীমিত রিসোর্সের মাধ্যমে নগরবাসীকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি জনজীবনে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে।”
ডিএমপির লুন্ঠিত অস্ত্রের বিষয়ে এখনও ‘হিসেব-নিকেশ’ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন,”যেহেতু অনেকগুলো স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আমরা এখনও পরিপূর্ণ তথ্য পাইনি। এটার কাজ চলছে, শেষ হলে আপনাদেরকে পরিপূর্ণ তথ্য দিতে পারবো।”
মোহাম্মদপুরে জোড়া খুনের ঘটনায় যুবক গ্রেফতার
শুক্রবার মোহাম্মদপুরে মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বধ্যভূমি সংলগ্ন বেড়িবাঁধে নাসির বিশ্বাস (২৯) ও মুন্না (২২) নামে দুইজনকে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় মিরাজ মোল্লা নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উপ-কমিশনার তালেবুর রহমান বলেন,এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই সুমন বিশ্বাসের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মোহাম্মদপুর থানায় রোববার একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি তদন্তকালে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় রোববারই মিরাজ মোল্লাকে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
“গ্রেফতার মিরাজ মোল্লা এলাকার এলেক্স ইমন গ্রুপের সদস্য। এই গ্রুপ মোহাম্মদপুর এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মিরাজের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় একটি আগের একটি মামলা রয়েছে।”
নাসির হত্যার সঠিক কারণ উদঘাটন করতে ও অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার করতে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
ডিআই/এসকে