রূপগঞ্জে স্ত্রী এবং পাঁচ বছরের কন্যা সন্তানকে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনার পলাতক আসামী মো.নুরুজ্জামান আনিস (৩৬) কে মামলা রুজুর ২৪ ঘন্টার ভিতর পটুয়াখালীর দুমকি হতে যৌথ অভিযানে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
সোমবার পটুয়াখালী জেলার দুমকি থানাধীন আঙ্গারিয়া এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৮, সিপিসি-১,পটুয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক লে.কমান্ডার মুহতাসিম রসুল।
তিনি জানায়,গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানাধীন তেতলাব এলাকার একটি ভাড়া বাসায় স্বামী কর্তৃক স্ত্রী এবং পাঁচ বছরের কন্যা সন্তানকে হত্যার ঘটনা ঘটে। ঘটনা সংঘটনের পরেই আসামী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায় ভিকটিম রোকসানা বেগমের পিতা বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এরপর ৯ সেপ্টেম্বর র্যাব-৮,সিপিসি-১ এবং র্যাব-১১, সিপিসি-১ এর যৌথ অভিযানে এই হত্যাকান্ডের পলাতক আসামী মো.নুরুজ্জামান ওরফে আনিস (৩৬) কে মামলা রুজুর ২৪ ঘন্টার মধ্যে পটুয়াখালী জেলার দুমকি থানাধীন আঙ্গারিয়া এলাকা হতে গ্রেফতার করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
যা আছে মামলার এজাহারে
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায় যে, আসামী মো. নুরুজ্জামান আনিস (৩৬) নয় বছর পূর্বে বরগুনা জেলার আমতলী থানার মোঃ শাহজাহান হাওলাদারের মেয়ে রোকসানা বেগম (৩০) কে বিবাহ করেন। দীর্ঘ নয় বছরের সংসার জীবনে তাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্য হয়। কিন্তু বিবাহের পর থেকে বিভিন্ন বিষয়ে নুরুজ্জামান এর সাথে তার পরিবারের মধ্যে দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকত। উক্ত কলহের জের ধরে গত ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে রাত ১২৩০ ঘটিকার পর পূর্বের ন্যায় তুচ্ছ বিষয়ে স্ত্রী রোকসানা বেগমের সাথে ঝগড়া শুরু করে। ঝগড়ার এক পর্যায়ে নুরুজ্জামান ক্ষিপ্ত হয়ে একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার স্ত্রীর গালে, ঘাড়ে, হাতেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়িভাবে কোপাতে থাকে। শুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় রোকসানা মেঝেতে লুটিয়ে পড়লে তার পাঁচ বছরের ছোট্ট কন্যা সন্ধন জান্নাত ঘুম থেকে উঠে চিৎকার করে এবং কান্নাকাটি শুরু করে। তখন আসামি দুরুজ্জামান ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছোট্ট কন্যা জান্নাতের মাথায় গলায় ও হাতে এলোপাথাড়ি কোপাইয়া রক্তাক্ত জখম করে। এই ঘটনার পর আসামী তার শ্যালক কে ফোন দিয়ে উক্ত ঘটনার বিষয়ে জানিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। উচ্চ সংবাদ শুনে ভিকটিমের পরিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে রোকসানা বেগমকে মৃত এবং শিশু জান্নাত কে রক্তাক্ত অবস্থায় তোষকের উপর পড়ে থাকতে দেখে। ভিকটিম রোকসানা ঘটনাস্থলে মারা গেলেও পরিবারের লোকজন শিশু জান্নাতকে প্রথমে কর্ণগোপ ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশু জান্নাত মৃত্যুবরণ করে।
ডিআই/এসকে