ফ্লাট নিয়ে দ্বন্দের জের ধরে রাজধানীর ওয়ারী থানাধীন হাটখোলা এলাকায় আপন দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন মো.আকবর হোসেন (৬০),তার ছেলে মো.আসিফ সুলতান সিফাত (২৭) এবং তার বন্ধু মো.আজাহারুল ইসলাম খান রিয়ান (২৮)।
গত ১৫ আগস্ট সকালে দুইভাই আল আমিন ভূঁইয়া (৪২) ও তার ছোট ভাই নুরুল আমিন ভূঁইয়াকে (৩৫) হত্যা করা হয়। এ ঘটনার নিহতদের বড় ভাই মো.রুহুল আমিন ভূইয়ার করা মামলার প্রেক্ষিতে শুক্রবার সাভার থেকে আসামিদের গ্রেফতার করে ওয়ারী থানা পুলিশ।
শনিবার ( ২১ সেপ্টেম্বর) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো.ছালেহ উদ্দিন।
ওয়ারী বিভাগের ডিসি বলেন,মো.রুহুল আমিন ভুইয়া (৪০) এর আপন মেঝ ভাই মো.আলামিন ভূইয়া (৩৮) ওয়ারী থানাধীন ১০ নং হাটখোলা রোডের “ক্লাসিক রিয়েল স্টেট কোম্পানীর” নিকট থেকে একটি ফ্ল্যাট ক্রয়ের চুক্তি করেন।
উক্ত ফ্ল্যাটের ল্যান্ড ওনার “এ্যাডভোকেট আকবর গং” এর সহিত ২০১৪ সালে রিয়েল স্টেট কোম্পানীর মালিক রিপন এর সাথে চুক্তি হয়। পরবর্তীতে ১০ বছরেও উক্ত স্থানে বিল্ডিং নির্মাণ না করায় ল্যান্ড ওনার এ্যাডভোকেট আকবর গং উক্ত স্থানে ২য় তলা নিজেদের অর্থায়নে নির্মাণ করে। যেহেতু বাদীর মেঝ ভাই মো.আলামিন ভূইয়া (৩৮) এর সাথে ক্লাসিক রিয়েল স্টেট কোম্পানীর ফ্ল্যাট ক্রয়ের চুক্তি হয়েছিল,সেহেতু আল আমিন ভুইয়া তার ছোট ভাই মো.নুরুল আমিন ভূইয়া কে সাথে নিয়ে গত ১৪ আগস্ট সকাল ১১ টার সময় ১০ নং হাটখোলা রোডের সামনে নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট দেখতে যায়। ঐ সময় আসামী সিফাত এর নেতৃত্বে আসামী আকবর,রিয়ান ও পলাতক অন্যান্য আসামীদের সহযোগীতায় ভিকটিম আল আমিন ও নুরুল আমিন ভুইয়াদ্বয়কে হত্যার উদ্দেশে স্টিলের ব্যাটন,স্টীলের চাকু,চাইনিজ কুড়াল দিয়ে বুক, পিঠ,মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে এ্যালোপাতাড়ি ভাবে গুরুতর জখম করলে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুইজনকেই মৃত ঘোষনা করে।
উক্ত ঘটনার বিষয়ে নিহতদের আপন বড় ভাই মো. রুহুল আমিন ভূইয়া থানায় এসে লিখিত এজাহার দায়ের করলে একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়।
মো.ছালেহ উদ্দিন বলেন,মামলা রুজু হওয়ার পর ওয়ারী থানার একটি বিশেষ টিম ঘটনাস্থলের আশেপাশের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং সোর্সের দেওয়া তথ্য মোতাবেক আসামীদের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের অবস্থান নির্ণয় করেন। পরবর্তীতে শুক্রবার ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো.আকবর হোসেন ও তার ছেলে মো. আসিফ সুলতান সিফাত ও তার বন্ধু মো.আজাহারুল ইসলাম খান রিয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাদের দেখানো ও সনাক্ত মতে ওয়ারী থানার ১০ নং হাটখোলা রোডস্থ নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের বাসা হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ১ টি চাইনিজ কুড়াল,১ টি বৈদ্যুতিক শক স্ট্যান্ড,১ টি চাকু, একটি স্টিলের ব্যাটন উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ডিআই/এসকে