বিআরটিএ চাকরি করলেই রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বনের যাওয়ার অভিযোগ প্রবণতার কমতি নাই এই কথা মানুষের মুখে মুখে।
সহকারী পরিচালক আব্দুর রশিদ গত ২০০৫ সালে বিআরটিএ’র ইঞ্জিনিয়ার শাখায় পরিদর্শক হিসাবে চাকরিতে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি সহকারী পরিচালক হিসেবে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সড়ক নিরাপত্তা শাখা, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় কর্মরত আছেন।
মন্ত্রণালয়ের চাকরি করার সুবাদে নিয়োগ বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য, ঠিকাদারি তদবির করে বর্তমানে তিনি ও তার স্ত্রী নামে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ করেছেন বলে জানা যায়। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় গত ১১ডিসেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ মো. উজ্জল হোসেন নামীয় একজন দুর্নীতি দমন কমিশনে তার বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগপত্রে উঠে আসে সহকারী পরিচালক আব্দুর রশিদ একজন ঘুষখোর ও অবৈধ সম্পদের মালিক বটে। তিনি বিআরটিএতে চাকরি করার সুবাদে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। সরকারি চাকরি করা অবস্থায় স্ত্রী সালমা আক্তার কুসুমের নামে এসএস এন্টারপ্রাইজ এবং এপেলবি নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন।
উক্ত প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ব্যাবহার করে অবৈধ পন্থায় কামিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। এরই মধ্যে ঢাকার পূর্বাচলে স্ত্রীর নামে একটি প্লট ক্রয়, ঢাকার উত্তরায় প্লট, ঝিলমিল প্রজেক্টে পাচ কাঠার একটি প্লট, ঢাকার সাভার আমিন বাজারে কয়েক বিঘাজমি ক্রয়, রাঙ্গামাটিতে সাত তলা আবাসিক হোটেল নির্মাণ, চট্টগ্রাম জাফরাবাদে প্লট ক্রয় সহ অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। ২০২২-২০২৩ আব্দুর রশিদের আয়কর নথি (জাতীয় পরিচয় নম্বর ১৫১১২৫০৭৪৩০৫৫,টিন নং ৬৯৬৬৫৪৯৬৯৪৫ সার্কেল ২০৯,কর অঞ্চল ১০) পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত অর্থ বছরে ১ কোটি ৩৯ লক্ষ ৯৬ হাজার ৮১১টাকার সম্পদ বিদ্যমান রয়েছে।
নথিতে তিনি আরো উল্লেখ করেন রাঙ্গামাটিতে সাত তলা একটি আবাসিক হোটেল তৈরি করেছেন,যার মূল্য নথিতে উল্লেখ করা হয়নি।চট্টগ্রাম জাফরাবাদে ৩৫ লক্ষ ৪১হাজার ৪০টাকা আয়কর নথিতে উল্লেখ করেছেন। আয়কর নথিতে থেকে আরো জানা যায়, নারায়ণগঞ্জে দুইটি জমি ক্রয়,ব্যবসায় মূলধন বিনিয়োগ করেছেন ২৯,৮৫,২৯৬টাকা,তার স্ত্রীর নামে শেয়ার ডেভেঞ্চারে বিনিয়োগ করেছেন ২০ লক্ষ টাকা,ডিপিএস করেছেন ৬লক্ষ ৮৩ হাজর ৫৫৬টাকা,স্ত্রীর নামে ঢাকা মেট্রো চ ১৩-৯২৯২, ঢাকা মেট্রো গ-১১-৫২১৪ আইকর নথিতে উপস্থাপন করেননি, স্ত্রী সালমা আক্তার কুসুমের আয়কর নথিতে পাওয়া যায়। এদিকে আয়কর নথিতে আব্দুর রশিদ ৪০ ভরি স্বর্ণ উপস্থাপন করেছেন কিন্তু দাম বা মূল্য নির্ধারণ দেখাননি। স্ত্রী সালমা আক্তার কুসুমের ২০২২-২০০৩ আইকর নথিতে মোট সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন ১কোটি ৩৫লাখ ৮০হাজার ৮৯৭টাকা।
এ বিষয়ের সালমান ফরাজী নামীয একজন ব্যক্তি সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, মন্ত্রী পরিষদ শাখা বাংলাদেশ সচিবালয়, সচিব জননিরাপত্তা বিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সচিব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও সচিব আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সচিবালয় বরাবর এই অবৈধ সম্পদের হিসাব বিবরণী,আয়ের উৎস ও বিচার চেয়ে আবেদন করেন। উক্ত বিষয়ে সহকারী পরিচালক আব্দুর রশিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সচিব স্যার ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করার জন্য অভিজ্ঞ লোকদ্বারা একটি ওয়ার্কিং টিম গঠন করেন, আমি উক্ত ওয়ার্কিং টিমের সাথে কাজ করার সুযোগ পাওয়ায় বিআরটিএর একটি কুচক্রী মহল আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্য এই মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করেছে।