রাহুর অভয়ারন্য এলজিইডি’র খানাতালাশি-৪
সম্প্রতি দেশের অন্য সব সংস্থার ঘুষবাজ,লুটেরা রাঘব বোয়াল থেকে টাকি শ্রেণীর মত ওই রাহুর অভয়ারন্য এলজিইডি’র ওই শ্রেণীটির কেউ ঘোলা পানিতে বুক চিতিয়ে ভাসছে, আবার কেউ ছুটাছুটি করেছে। আর তাতেই তাদের লুটপটের জমানো সামলে রাখা মাল ভান্ডার গুলোও নজরে পড়ছে। সে পথেই খোঁজ মেলে-এলজিইডি’র প্রধান কার্যালয়স্থ প্রশাসন শাখার অসংখ্য কর্মকর্তাদের
লোমহর্ষক সব ঘুষবাজি আর লুটপাটময় নানা কু-কান্ড। এসব ছদ্মবেশী সুধীজনদের কু-কীর্তির খানাতালাশির লম্বা-চওড়া বে-খবরটার আগে আরেকটি খন্ড গল্পে এলজিইডি’র মোঃ আব্দুল বারেক মন্ডল নামের এক মহাধুরন্ধর প্রকল্প পরিচালক (পিডি)’র নানা কু-নীতি ঘেরা কু-কীর্তির খানাতালাশির ছোট গল্পটা শোনানো বা দেখানোর চেষ্টা করা হয়। এতে এলজিইডি’র রাজশাহী বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প আইডিআরডব্লিউএসপি’র প্রকল্প পরিচালক আব্দুল বারেক মন্ডলের ধুরন্ধরিপনা আরো খোলামেলা ভাবে ধরা পড়ে। আগের ওই প্রতিবেদনটি তার নজরে পড়ার পর তা ধামাচাপা দিতে শুরু করেন নানা তালবাহানা। কখনো চলে তার পালা বখরাখোর দালাল সংবাদিকদের লেলিয়ে দিয়ে দমানোর চেষ্টা। আবার কখনো চলে হুমকি-ধমকি। আর তারই রেশে এ পর্বটি।
অদক্ষ হলেও মহাধুরন্ধর বটে,আব্দুল বারেক মন্ডল অনিয়ম ও দুর্নীতিতে চৌকশ। তারই বলে আউটসোর্সিং জনবল নিয়োগ, কনসালটেন্ট ফার্ম নিয়োগ, প্রকল্পের কেনাকাটা, বিভিন্ন কোডে কন্টিজেন্সির টাকা ভূয়া বিল- ভাউচার করে টাকা উত্তোলন করেন। এছাড়া মহা ধুরন্ধর বারেক অফিসের আসবাবপত্র,ডেকোরেশন কিছুই না করে ধুরন্ধরী প্রভাব খাটিয়ে প্রায় দশ লাখ টাকার বিল ভাউচার করে নেয়। এদিকে তিনটি কোডে কম্পিউটার ও কম্পিউটার সামগ্রী ক্রয় বাবদ ডিপিপি’তে এক কোটি ১৮ লাখ টাকা ধার্য থাকলেও নামমাত্র কয়েকটি কিনে কয়েকটি অন্য প্রকল্পের থেকে নিয়ে তা নতুন ক্রয় দেখিয়ে প্রকল্পের এক বছর হতে না হতেই, প্রায় ৫০ লাখ টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন পিডি বারেক। জিওবি’র অর্থায়নে দুই হাজার চার’শ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি শুরু হয়-২০২৩ সালের জুলাই মাসে। আর শেষ হওয়ার কথা-২০২৮ সালের ৩০ জুন। সেই সাথে ডিপিপি’তে কন্টিজেন্সির অন্য তিন কোড অন্যান্য যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি ১০ লাখ,প্রকৌশল ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি এক কোটি ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি খাতে পাঁচ লাখ মোট এক কোটি ১৫ লাখ টাকা গ্রাসের নিরব তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছেন পিডি বারেক। আর এ প্রকল্পের ডিপিপি’তে স্ট্যাম্প ও সীল তৈরি খাতে বরাদ্দ ১৫ লাখ টাকা। কিন্তু পিডি বারেক মন্ডল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তাদের নিজ খরচে সীল তৈরির নির্দেশ দেন। এতে সকলে ইতোমধ্যে তা তৈরী করে কাজ করছেন। আর পিডি বারেক মন্ডল কয়েক হাজার টাকার সীল বানিয়ে সরবরাহকারীর কাছ থেকে চার লাখ টাকার বিলে স্বাক্ষর করিয়ে সমুদয় টাকা ভরেছে তার পকেটে। প্রভাবশালী জনৈক ব্যক্তির ছবি দেখিয়ে হুমকি দিয়ে বিল তৈরি করানোর খবর সবারই জানা। এছাড়াও মনিহারি পন্য ক্রয় খাতে ধরা ৮০ লাখ টাকার বড় অংশ ইতোমধ্যে ভুয়া বিল ভাউচার করে উঠিয়ে নিয়েছেন পিডি বারেক। তাছাড়া আউটসোর্সিং’এ জনবল নিয়োগ দিয়ে দুই থেকে চার লাখ টাকা হারে প্রায় দুই কোটি টাকা ঘুষের বিনিময়ে আউটসোর্সিং’এ ৫৮ জন লোক নিয়োগ দিয়েছেন। তার মধ্যে আট জন সহকারী প্রকৌশলী,১২ জন উপসহকারী প্রকৌশলী,৩০ জন কার্যসহকারী ও অন্যান্য পদে আট জন। এদের কেউ কেউ ঘুষের পুরো টাকা না দিতে পারায় বাকি টাকা প্রতি মাসের বেতন থেকে পাঁচ হাজার টাকা আদায়ের মত ন্যাক্কারজনক ধান্ধাও হাতছাড়া করেন নি ওই বারেক মন্ডল। আর কনসালটেন্ট ফার্ম নিয়োগ দিয়ে আদায় করেন তিন কোটি টাকা ঘুষ। তিনি ডিপিপি’তে কনসালটেন্ট পার্টে বরাদ্দ ১৫কোটি টাকা আত্মোসাতের আয়াসে কনসালটেন্ট ফার্ম কর্তৃপক্ষকে নাম মাত্র থাকার শর্তে লুটপাটের ময়দান প্রস্তুত করেন। আর তাই মহাধুরন্দর বারেক মন্ডলের জনৈক প্রভাবশালীর নাম ভাঙ্গিয়ে ও ছবি দেখিয়ে ছলচাতুরি ও ধুরন্ধরীর নানা দিকসহ লব্ধ আখেরের খন্ডাংশটা এরপরের পর্বে।
তবে একইভাবে সহকারী প্রকৌশলী প্রশাসন জামাল উদ্দিনির্বাহী প্রকৌশলী প্রশাসন হানিফ মন্ডল, নির্বাহী ,নির্বাহী প্রকৌশলী ঢাকা,,পিডি আব্দুল বারেক মন্ডল,আব্দুল বারেক,মুজিবুল হক সমাজি,আবু জাকির সেকান্দার,মাহমুদুল হক,আদনান,আব্দুস সাত্তার,জিল্লুর রহমান,মাহবুবুর রহমান,বাবুল আক্তার,এস এম কবির, মনজুর আলম সিদ্দিকী,ইফতেখার আলী,রেজাউল হক,আবুল কালাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা,নঈম উদ্দিন মিয়া একই ধরনের নানা কু-কর্মের ছড়ানো দুর্গন্ধ ও প্রধান প্রকৌশলীর চেয়ার দখলে ত্রিমুখী নিরব ধস্তাধস্তির অস্বস্তির দূঃসংবাদের গল্পগুলোও আসার অপেক্ষা।