রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো.সুমন মিয়াকে শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলাল ও তার সহযোগীরা মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করিয়ে নির্যাতন করাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সুমন মিয়ার সহধর্মিণী জান্নাতুল ফেরদৌস।
রবিবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলাল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন তিনি। এসময় তার স্বামীর মুক্তিসহ পিচ্চি হেলাল ও তার সহযোগীদের হাত থেকে মোহাম্মদপুরবাসীদের বাঁচানোর জন্য তাদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান ওই নারী।
সংবাদ সম্মেলনে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, “মোহাম্মদপুরের একটি রাস্তার মোড়ের জমিকে কেন্দ্র করে শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলাল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের ওপর বিভিন্ন সময় হামলা করে। আমার স্বামীকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছে। বেশ কয়েকবার আমার বাড়িতে ভাঙচুর ও ডাকাতি করেছে।”
বিএনপির কর্মী হওয়ায় গত সরকারের আমলে তার স্বামীকে বেশ কিছু মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই নারী।
তিনি বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর আমার স্বামীর নামে একটি মিথ্যা মামলা করা হয়। যার মধ্যে আমার স্বামী কোনোভাবেই জড়িত নয়। গত ২০ নভেম্বর আমার স্বামী জমির ব্যাপারে সাক্ষি দিতে আদালতে যায়। সেখান পিচ্চি হেলালের সহযোগীরা অবৈধ ক্ষমতাবলে আমার স্বামী মো. সুমন মিয়াকে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করায়।”
আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও পুলিশ সুমন মিয়াকে অমানুষিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তার স্ত্রী। বলেন, “আদালতের মৌখিক নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও আমার স্বামীকে অন্যায়ভাবে অমানুষিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছে পুলিশ। আমার স্বামীর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল কাদির, তবে তার চেয়ে বেশি টর্চার করছেন এসআই আলতাব। তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা আমাদের বলেন, ‘আমরা ডিসি (উপ-কমিশনার) স্যারের নির্দেশে জিজ্ঞাসাবাদ করতেছি’। এ ব্যাপারে আমরা ডিসির শরণাপন্ন হলে তিনি আমাদের বলেন, আদালত নাকি সুমনকে ২৪ ঘণ্টা করে ছয় দিনই পেটাতে বলেছে।”
পিচ্চি হেলালসহ তার সহযোগীদের বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য তুলে ধরে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, “এই সন্ত্রাসী বাহিনীর জমি দখল, খুন, ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে মোহাম্মদপুরবাসী নাজেহাল। পিচ্চি হেলালের সহযোগী জাহিদ মোড়ল লালমাটিয়া থেকে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত জমি দখল, ছিনতাই, ফুটপাতে চাঁদাবাজি ও কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করে করে। মান্নান হোসেন শাহীন মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে চাঁদ উদ্যানসহ বছিলা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করে।”
কেউ প্রতিবাদ জানালে তাকে বিভিন্ন প্রকার হয়রানি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয় এবং মোটা অঙ্কের টাকা হাতানো হয় বলে জানান তিনি।
পিচ্চি হেলালের বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে চাইলে নাম শুনেই পুলিশ জিডি নেয়নি বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আমাদের জিডি না নিয়ে অজানা কারণে আমাদের অপমান করে বের করে দেওয়া হয়েছে।”
“এখন আমার দুই বাচ্চাসহ আমার পরিবারের হেফাজতের দায়িত্ব কে নেবে? আমরা কি স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারব না?” প্রশ্ন করেন তিনি।
জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, “মোহাম্মদপুরে শুধু আমরাই নই, শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালের অত্যাচারে সবাই অতিষ্ঠ। বর্তমানে মোহাম্মদপুর ছিনতাই ও ডাকাতিতে রেকর্ড করেছে, যার মূল হোতা এই পিচ্চি হেলাল বাহিনী।”
পিচ্চি হেলালের ‘কালো হাত’ ও ‘মামলা বাণিজ্য’ থেকে মোহাম্মদপুরবাসীকে রক্ষা করার আহ্বান জানান তিনি।
জান্নাতুল বলেন, “আমি আমার স্বামীর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলাল ও তার সহযোগী মফিজুল ইসলাম মফি, দীপু, বাবু, জাহিদ মোড়ল, মান্নানসহ সব সন্ত্রাসীর শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।”
ডিআই/এসকে