বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও অন্যান্য কারণে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও নিরীহ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে করা হয়রানিমূলক মামলাগুলো প্রত্যাহারের সুপারিশ করার লক্ষে দুটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। জেলা ও মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এ দুইটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ আবদুল মোমেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
জেলা পর্যায়ের কমিটিতে যারা থাকবেন:
জেলা পর্যায়ের কমিটিতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়া সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপার ও পাবলিক প্রসিকিউটরকে কমিটির সদস্য এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সদস্য সচিব হিসেবে কমিটিতে থাকবেন।
মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটিতে যারা থাকবেন: মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটিতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। সদস্য হিসেবে কমিটিতে থাকবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, অতিরিক্ত সচিব (আইন ও শৃঙ্খলা),স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব (আইন) এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি। এছাড়া সদস্য সচিব হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আইন-১ শাখার উপসচিব/সিনিয়র সহকারী সচিব/সহকারী সচিব।
জেলা পর্যায়ের কমিটির কার্যপরিধি ও কর্মপদ্ধতি: ১) রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য আগামী ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদনপত্র দাখিল করতে হবে; ২) আবেদনের সঙ্গে এজাহার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চার্জশিটের সার্টিফাইড কপি দাখিল করতে হবে; ৩) আবেদন প্রাপ্তির সাত কর্মদিবসের মধ্যে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দরখাস্তটি জেলার পাবলিক প্রসিকিউটরের (ক্ষেত্র বিশেষে মেট্রোপলিটান পাবলিক প্রসিকিউটর) কাছে মতামতের জন্য পাঠাবেন; ৪) আবেদন প্রাপ্তির ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পাবলিক প্রসিকিউটর (ক্ষেত্র বিশেষে মেট্রোপলিটন পাবলিক প্রসিকিউটর) তার মতামত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর পাঠাবেন।
৫) পাবলিক প্রসিকিউটরের মতামত সংগ্রহপূর্বক জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনটি সাত কার্যদিবসের মধ্যে জেলা কমিটির সভায় উপস্থাপন করবেন; ৬) জেলা কমিটির নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, মামলাটি রাজনৈতিক বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে হয়রানির জন্য করা হয়েছে, তাহলে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য কমিটি সরকারের কাছে সুপারিশ করবে; ৭) জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত সুপারিশ, মামলার এজাহার, চার্জশিটসহ আবেদন প্রাপ্তির ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে সংযুক্ত ‘ছক’ অনুযায়ী তথ্যাদিসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে।
মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটির কার্যপরিধি ও কর্মপদ্ধতি: ১) জেলা কমিটির কাছ থেকে সুপারিশ প্রাপ্তির পর মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি সুপারিশগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে এবং প্রত্যাহারযোগ্য মামলা চিহ্নিত করে তালিকা প্রস্তুত করবে ও মামলা প্রত্যাহারের কার্যক্রম গ্রহণ করবে; ২) দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর আওতাধীন মামলাগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলাগুলো দ্য ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট, ১৯৮৫-এর ১০(৪) ধারার বিধান অনুযায়ী কমিশনের লিখিত আদেশ ছাড়া প্রত্যাহার করা যায় না। এ কারণে এ ধরনের মামলা চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করতে হবে। এ ধরনের মামলার বিষয়ে করণীয় পরবর্তীতে নির্ধারণ করা হবে।
ডিআই/এসকে