এলজিইডির প্রকল্প পরিচালক আবুল মনজুর মোহাম্মদ সাদেক।
চট্টগ্রাম গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ৩ ( সংশোধিত ১) প্রকল্পের পরিচালক তিনি। একই সাথে তিনি আমার গ্রাম আমার শহর প্রকল্পের কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের ও পরিচালক। এলজিইডিতে ম্যানেজ মাস্টার হিসেবে পরিচিত এই প্রকল্প পরিচালক দুটি প্রকল্পে টেন্ডার জালিয়াতি করে, মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে কাজ প্রদান এবং কাজ না করে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে কোটি টাকা লোপাট করেছেন মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, তিনি সরকারি চাকরি বিধিমালা না মেনে রবিন একজন সরবরাহ কারীর নাম ব্যবহার করে ঠিকাদারি ব্যবসা ও জমির ব্যবসার করে আসছেন দীর্ঘদিন পর্যন্ত । সম্প্রতি দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্প পরিচালকের দূর্নীতি ও অর্থ লোপাটের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে প্রধান প্রকৌশলী বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। একই অভিযোগ এর অনুলিপি দেয়া হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে।
জানা গেছে, বৃহত্তম চট্টগ্রাম গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ৩ ( সংশোধিত ১) প্রকল্পে বরাদ্ধের পরিমান ১হাজার ৩শত ৩০ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের কাজ বিতরণে প্রকল্প পরিচালক টেন্ডার জালিয়াতির আশ্রয় নিযেছেন বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে সর্বনিম্ন দরদাতাকে টেন্ডারের কাজ না দিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতাকে কাজ দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি হাতিয়ে নিযেছেন কোটি কোটি টাকা।
এ দিকে আমার গ্রাম আমার শহর প্রকল্পে কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের বরাদ্ধ ২৮ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে কোন কাজ না করেই ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে সমুদয় অর্থ আত্মস্যাৎ করার সুনির্দিষ্ট প্রমান পাওয়া গেছে। জানা গেছে এ প্রকল্পের বিষয়ে হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে একটি সেমিনার অনুষ্ঠান করা হয়েছে এমন বিল ভাউচার দেখিয়ে তুলে নেয়া হয়েছে কয়েক কোটি টাকা। একটি সেমিনার আয়োজনে কয়েক কোটি টাকা খরচ দেখানো কে পরিস্কার দূর্নীতি হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর। তথ্যমতে, জানুয়ারি ২০২১ থেকে জুন ২০২৩ এর মধ্যে প্রকল্পের ২১ কোটি টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। যেখানে কোন কাজই আসলে করা হয়নি।
এদিকে এলজিইডির জি আই এস ইউনিটের ডাটা কপি করে বই বানিয়ে এবং পরামর্শক নিয়োগের মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। এলজিইডিতে কর্মশালা করার সুযোগ থাকার পরও সেখানে তা না করে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এবং , সোনারগাঁও এ কর্মশালা দেখিয়ে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ লোপাটের অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
পরিচালক আবুল মনজুর মোহাম্মদ সাদেক এর ব্যক্তিগত জীবনের খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, ঢাকার আগারগাঁও, ধানমন্ডি এবং মিরপুর ১ নং এ নিজের এবং স্ত্রী সহ সন্তানদের নামে একাধিক ফ্ল্যাট কেনা রয়েছে। নিজের স্ত্রীর সন্তানদের নামে একাধিক ব্যাংক একাউন্টে রয়েছে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ। কক্সবাজার শহরে অভিজাত হোটেল লাবনী, রয়েল টিউলিপ, লং ব্রিজ হোটেলে তার শেয়ার রয়েছে বলে জানা গেছে।
আমার গ্রাম আমার শহর প্রকল্পে কারিগরি সহায়তা প্রকল্প এর পরিচালক আবুল মঞ্জুর মোহাম্মদ সাদেক।
জানুয়ারি ২০২১ থেকে জুন ২০২৩ মোট বরাদ্দ ২৮ কোটি টাকার মধ্যে, খরচ হয়েছে ২১ কোটি টাকা। কোন কাজ না করে ভুয়া বিল ভাউচার আর হোটেল সেমিনার করে। ইন্টার কন্টিনেন্টালে সেমিনার করা হয়েছে। সেমিনারের ব্যয় বিল ভাউচারের মাধ্যমে খরচ দেখানো হয়েছে কোটি টাকা। বিল ভাউচারে অতিরিক্ত ব্যয় এবং ভুয়া বিল তৈরি করে এই অর্থ লুটপাট করা হয়েছে।
কক্সবাজারে হোটেল ব্যবসার সাথে জড়িত একটি সূত্র তার শেয়ার থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা হোটেল ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন। আরো জানা গেছে, সরকারি চাকরি বিধিমালার তোয়াক্কা না করে অন্যের নাম ব্যবহার করে তিনি নিজেই ঠিকাদারি ব্যবসা ও জমির ব্যবসার সাথে জড়িয়ে রয়েছেন।