বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি’র (বিআরটিএ) টাঙ্গাইল সার্কেলের সহকারী পরিচালক আলতাফ হোসেন শুভ চাকরীর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ঘুষ – দূর্নীতির মাধ্যমে অর্ধশত কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। একই ভাবে তার ভগ্নিপতি (দুলাভাই) মো. আব্দুল জলিল মিয়া সহকারী পরিচালক হিসেবে পটুয়াখালীতে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি কিছুদিন হয় এল,পি,আরে গেছেন। তিনিও চাকরী শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঘুষ– দূর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার এই ঘুষ –দূর্নীতির কারনে ঢাকার সেগুনবাগিচায় দূর্নীতি দমন কমিশন ও পাবনা দূর্নীতি দমন কমিশন (দূদক) কার্যলয়ে জলিল ও তার স্ত্রীর নামে ৩ টি মামলা হয়েছে। সেই মামলা গুলি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিআরটিএ’র কর্মকর্তা– কর্মচারী ও সাধারণ মানুষের মুখে একই কথা স্যালক — দুলাভাই মিলে ঘুষ, দূর্নীতির মাধ্যমে শতকোটি টাকা বেশী হবে হাতিয়ে নিয়েছেন। তাই তাদের নাম দিয়েছে স্যালক–দুলাভাই মিলে বিআরটিএ গিলে খেয়েছে। আলতাফ হোসেন শুভ চাকরীর শুরু করেন মিরপুর বিআরটিএতে দীর্ঘদিন একই জায়গায় চাকরী করার কারনে তিনি ঘুষ ও বিভিন্ন দূর্নীতির কারনে তাকে বদলী করে রংপুর বিভাগে একটি বিআরটিএতে। সেখানেও একই অবস্হার কারনে আবার দবলী করা হয় টাঙ্গাইলের বিআরটিএতে। সে জায়গায়তো ঘুষ–দূর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে বলে স্হানীয়দের অভিযোগে জানা গেছে। এদিকে গত ২০২৩ সালের ১০ আগস্টে মো. মমিনুল হক নামের এক ব্যক্তি সেগুনবাগিচাস্হ দূর্নীতি দমন কমিশন ( দুদক) কার্যলয়ে সহকারী পরিচালক আলতাফ হোসেন শুভ বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। সেই অভিযোগের মাধ্যমে ও অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীর রুপনগর ইষ্টান হাউজিং এর ৪ নম্বর রোডে ২৪ নম্বরে ছয় তলা একটি বাড়ী আছে। একই এলাকা আরো একটি ৫ কাটার প্লট রয়েছে। এছাড়া ভাষাণটেক শ্যামল পল্লী আবাসিক এলাকায় ৪ নম্বর রোডের ২৮ নম্বরে ৫ কাটা জমির ওপরে ৩ তলা একটি বাড়ী রয়েছে। অভিযো সূত্রে আরো জানা যায়, মিরপুর জল্লাদখানা এলাকায় ৩ নম্বর রোডে ৭৮ নম্বরে একটি টিনসেট বাড়ী আছে। পাবনা শহরে তার একটি আলিশান বাড়ী রয়েছে। এছাড়া আরো বেনামে অনেক জায়গায় রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তার পরিবার একটি গাড়ী ব্যবহার করেন, ঢাকা মেট্রো- গ – ২৭ –২৫২৫। যা বিআরটিএ রেজিস্ট্রিশন সুত্রে জানা যায়, গাড়ী তার বড় ভাই আবুল কালাম আজাদের নামে। তার নামে গাড়ীটি ক্রয় করে শুভ। তার ভাই একজন মিরপুর –১ ওয়াসার পাম্প অপারেটর মেক্যানিক হিসেবে কর্মরত আছেন। আজাদ মিরপুর বিআরটিএতে দালালি কাজে জড়িত রয়েছে জানা গেছে। মিরপুর বিআরটিএ’র মোটরযান পরিদর্শক থাকাকালীন ২০১০-১১ সালে ব্যাংক পে অর্ডার ছাড়াই ফিটনেস দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা যায়।এই টাকা দিয়ে মিরপুর ১৩ নম্বর, ভাষানটেক, মিরপুর ১১ নম্বর এভিনিউ-৫ ও মিরপুর ইস্টান হাউজিং এ নামে বেনামে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করেছেন। এইসব অপকর্মের কারণে আব্দুল জলিল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ৫-৬ বছর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদুক), সেগুন বাগিচা, ঢাকা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা একটি মামলা করেন।এই মামলার পরে দুদুকসহ কাফরুল থানা পুলিশের একটি টিম জলিল মিয়ার ১৩ নাম্বারের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ফিটনেস ও লাইসেন্স উদ্ধার করে। যেন তার বাসায়ই আর একটি বিআরটিএ। এত কিছুর পরেও সেই মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হননি। তাদেরকে বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে উক্ত মামলা ধামাচাপা দিয়ে রাখেন।পরবর্তীকালে তিনি প্রমোশন নিয়ে সহকারী পরিচালক হয়ে পটুয়াখালী জেলার বিআরটিএতে যোগ দেন। সেখানে গিয়েও তার দুর্নীতি থেমে নেই। বিআরটিএ’র ফিটনেস অনলাইন হওয়ার পর পটুয়াখালী বসেও বড় বড় বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন পরিদর্শন না করে টাকার বিনিময়ে গাড়ির ফিটনেস দেন তিনি।
অনুসন্ধানে জানা যায় বরগুনার এলজিইডির বেশ কিছু গাড়ির ২০১৯-২০ সালে নিলাম হয়। নিলামে দেখা যায় ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১ ৩৮৪৯ ব্যক্তি মালিকাধীন গাড়িটি এলজিইডির নামে নিলাম হয়। ভুক্তভোগী গাড়ির মালিক গাড়িটির মালিকানা সম্পর্কে জানতে চাইলে আব্দুল জলিল মিয়াকে ভুক্তভোগীকে বলেন, ‘আমার পরিদর্শনে ভুল ছিল, সম্ভব হলে আমি ঠিক করে দেব।কিন্তু এখন পর্যন্ত গাড়িটির কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়নি। এ ছাড়া, বিভিন্ন জেলার এলজিইডি নামের গাড়ি বরগুনা এলজিইডি নিলামে দেখা যায়। সে নিলাম বোর্ডে ছিলেন সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) পটুয়াখালী সার্কেল আব্দুল জলিল, মেক্যানিকেল ফোরম্যান এলজিইডি বিনয় কুমার ঘোষ, সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী এলজিইডি মো. হোসেন আলী মীর, নির্বাহী প্রকৌশলী এলজিইডি বরিশাল বিভাগ মো. নজরুল ইসলাম।ইতিমধ্যে বিআরটিএ ঘুষ-দুর্নীতির দায়ে পাবনা জেলায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর আব্দুল জলিল ও তার স্ত্রী মাহমুদা নাসরিনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। দুদুকের পাবনা জেলার উপ-পরিচালক খাইরুল হক এক প্রতিবেদনে বলেন, অনুসন্ধানের পর আব্দুল জলিল ও তার স্ত্রীর নামে মামলা করা হয়েছে।তিনি আরও বলেন, তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। উক্ত অভিযোগ পত্রে তার স্ত্রীর নামে প্রায় ৪ কোটি টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে।
তাদের এত অপকর্মে কথা অনেক পত্র পত্রিকায় প্রকাশের পরও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কতৃপক্ষ অবগত হওয়ার পরও তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্হা গ্রহন না করায় সাধারণ কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সাধারণ জনগন হতাশায় ভুগছেন। সহকারী পরিচালক আলতাফ হোসেন শুভ দিন দিন আরো বে – পরোয়া হয়ে উঠেছেন ঘুষ – দূর্নীতি দিকে। চলবে, পর্ব — ১ ।