শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বাংলাদেশে ৭৬ বছরের মধ্যে রেকর্ডভাঙা তাপপ্রবাহ Logo মাহিনকে চাপা দেওয়া গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ভাড়া করা চালক: মেয়র তাপস Logo জামিল আর নেই। Logo পটুয়াখালীর কমলাপুর ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ্ব আঃ ছালাম মৃধা’র নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা Logo স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউট এর পিএফএম সেবার স্মার্ট রুপান্তরকরণ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo ই-ক্লাবের বৈশাখী আড্ডা Logo ট্রেন থেকে নামার সময় পিছলে পড়ে আনু মুহাম্মদের দুই পা ক্ষতিগ্রস্ত Logo মা ও মেয়েকে সংঘবদ্ধভাবে গণধর্ষণ,যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ধর্ষক গ্রেফতার Logo র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম’র অভিযানে পবিত্র ঈদ-উল- ফিতর’কে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি প্রতিরোধে ০৬টি কিশোর গ্যাং গ্রুপের গ্রুপ প্রধান ও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ গ্রেফতার-৩৩ Logo সাধারণ মানুষের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করলেন সেলিমা আহমাদ

দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন তেজগাঁও এসিল্যান্ড হেলাল উদ্দীন

মনিরুজ্জামান / ৭৫ Time View
Update : মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০২৪, ৫:২৭ অপরাহ্ন

রাজধানী তেজগাঁও এসি ল্যান্ড অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন (পরিচিতি নং- ১৮৮৩৮) ও নাজির কাম ক্যাশিয়ার আনিছুর রহমান সার্ভেয়ার কানুনগো সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভূমির জালজালিয়াত চক্রের সঙ্গে তাদের সখ্য রয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়। নামজারি ও মিস কেসের নামে তাদের ঘুষবাণিজ্য ওপেন সিক্রেট। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তেজগাঁও অফিসের এসিল্যান্ড, কানুনগো, নাজির, সার্ভেয়ারের দৌরাত্ম্যে জিম্মি সেবা গ্রহীতারা। এখানে মোটা অঙ্কের ঘুষ ছাড়া মিলে না সেবা । এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে এসিল্যান্ড অফিসের সামনে মানববন্ধন ও আন্দোলনের হুশিয়ারিও দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ততম শিল্প ও বাণিজ্যিক এলাকা তেজগাঁও। ঢাকার ছোট, বড়, মাঝারি শিল্প-কারখানা ও বেশ কয়েকটি আবাসন কোম্পানি ও আবাসিক এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে তেজগাঁও রাজস্ব সার্কেল। যার ভূমি সংক্রান্ত সকল সেবা নিশ্চিত করে থাকে এই এলাকার এসিল্যান্ড। সেবার নামে অফিস ঘুষ, দুর্নীতি আর অনিয়মের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। নামজারির আবেদন থেকে শুরু করে নামজারির প্রস্তাব, সার্ভে রিপোর্ট, ডি.সি.আর সংগ্রহসহ কোনো সেবাই ঘুষ ছাড়া মিলে না। এসিল্যান্ডের ঘুষের অভিনব এক সাংকেতিক চিহ্ন ‘এলআর’। সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ভূমি সংশ্লিষ্ট সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নাজির আনিছুর রহমানের মাধ্যমে এসিল্যান্ডের নিজস্ব নিয়মে চলছে তেজগাঁও এসিল্যান্ড অফিস। তাদের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতায় জিম্মি হয়ে পড়েছেন জমি মালিক ও অংশীদারসহ সেবা গ্রহীতারা। কোন সেবাপ্রার্থী এসিল্যান্ডের ধার্যকৃত ঘুষের টাকা দিতে অস্বীকার জানালে তার নামজারি নথি ও মিস কেসের ফাইল আটকে রাখা হয়। অভিযোগ রয়েছে, তেজগাঁয়ে সরকারি হিসাব অনুযায়ী, শতাংশের পয়েন্ট হারে এসিল্যান্ড ও সার্ভেয়ারের ঘুষের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। সেবা গ্রহীতারা নির্ধারিত হারের টাকা না দিলেই ফাইল আটকে মাসের পর মাস ঘোরাতে থাকে। একপর্যায়ে জমির প্রকৃত মালিকের নামে নামজারি না করে ঘুষের বিনিময়ে জালিয়াত চক্রের দায়ের করা মিস কেসের পক্ষে রায় দেওয়া হয়। অন্যদিকে অবৈধ দখল দেওয়া প্রভাবশালী চক্রের বিরুদ্ধে জমির প্রকৃত মালিক মিস কেস করে ঘুষ না দিলেই পড়েন মহাবিপদে। ঘুষের নির্ধারিত টাকার কম দিলেও ভুক্তভোগীদের চার-পাঁচ বছর এসিল্যান্ড অফিসের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। বাড্ডা এলাকার এক ভুক্তভোগী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমি ২০০৯ সালে বাড্ডা মৌজায় জমির প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে ৯ শতাংশ জমি ক্রয় করি। জমি ক্রয়ের পরই নিজ নামে নামজারি করে খাজনা পরিশোধ করে আসছি। বর্তমানে আমি ভোগদখলেও আছি। এদিকে গত জানুয়ারী মাসে আমার জমির বিরুদ্ধে মিস কেস করে একটি কুচক্রী মহল। পরে সব কাগজপত্র যাচাই করে এসিল্যান্ড ওই মামলা বাতিল ঘোষণা করেন গত ফেব্রুয়ারি মাসে। পরে কয়েকদিন পরেই একই বাদীর মাধ্যমে নাজিরের যোগসাজশে এসিল্যান্ড শরীফ মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন আবারও একই বিবাদীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। অথচ এসিল্যান্ডের বাতিল করা মামলা কোনোভাবেই একই বাদী দ্বিতীয়বার একই বিবাদীর বিরুদ্ধে করার সুযোগ নেই। কিন্তু মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে দ্বিতীয়বার মামলা নিয়েছেন এসিল্যান্ড।’ সরেজমিন দেখা য়ায়, তেজগাঁও এসিল্যান্ড অফিসের প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই নামজারি সম্পর্কিত তথ্যবহুল বড় বড় ব্যানার ও লিফলেটে লেখা আছে, আবেদনের জন্য কোর্ট ফি ২০ টাকা, নোটিস জারি ফি ৫০ টাকা, রেকর্ড সংশোধন বা হালকরণ ফি ১০০০ টাকা ও প্রতি কপি মিউটেশন খতিয়ান ফি ১০০ টাকা। সব মিলিয়ে ১১৭০ টাকা। কিন্তু ব্যানার বা লিফলেটে দেওয়া নির্দেশাবলি ব্যানার পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে। প্রতিটি ডিসিআরের জন্য নেওয়া হচ্ছে সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত। অভিযুক্ত কর্মকর্তা প্রতি পর্চা ও ডিসিআর স্বাক্ষরে নিচ্ছেন ৫ হাজার টাকা। এসব ঘুষের টাকা আদায় করছেন এসিল্যান্ডের অধীনস্থ নাজির ও কর্মচারীদের মাধ্যমে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অফিস সহকারী বলেন, ‘আমরা অনিয়ম করতে না চাইলেও এ কাজে আমাদের বাধ্য করেন এসিল্যান্ড স্যার। তাছাড়া টাকার লোভ কি সামাল দেওয়া যায়।’ তবে অভিযোগের বিষয়ে তেজগাঁও সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীনের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category